দ্যা জার্নি টু ফেইথ এন্ড স্ট্রাগল ইন লাইফ।
লিখেছেন লিখেছেন ঘুম ভাঙাতে চাই ১৭ আগস্ট, ২০১৬, ১২:২৫:৪০ দুপুর
বেশ কিছুদিন শারিন সফি অদ্রিতার ধারাবাহিক লেখা "দ্যা জার্নি টু ফেইথ" সিরিজটা পড়লাম। মাসাআল্লাহ অসাধারণ একটা লেখা। যারা এমন স্রষ্টাবিমুখ অবস্হা থেকে স্রষ্টামুখী হয়েছেন তাদের সবারই দীনি জীবনে আসার পেছনে এমনই কোন না কোন গল্প আছে বা কোন না কোন আয়েশা, আবির নামক চরিত্রগুলো জড়িয়ে আছে। তবে সবার দীনি জীবনই যে এত মসৃণ হয়, বোধশক্তি আসার পর পুরণো পোষাক ছুড়ে ফেলে শপিংয়ে গিয়ে নতুন হিজাব, আবায়া কিনে তা শরীরে জড়িয়ে ফেললেই যে নিজের জীবনের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়ে যায়, এই পরিবর্তনে যে মা বাবাও খুশি হয়ে যান- ব্যাপারটা মোটেও এরকম হয়না সবার ক্ষেত্রে। কাউকে কাউকে স্ট্রাগল না করতে হলেও অনেককে মারাত্নক অবস্হার মুখোমুখী দাড়াতে হয়। এই জীবনের অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র তারাই শেয়ার করতে পারেন যারা এমন পরিস্হিতির মুখোমুখী হয়েছেন আর তাদের মধ্যে আমাদের যাহরাহ অন্যতম একজন মুসলিম নারী। দুনিয়ালোভী ফ্যামিলিতে তার অবস্হান, প্রতিনিয়ত তাকে নিজের দীনি জীবন রক্ষা করে চলতে পরিবারের ভেতরেই সংগ্রাম করতে হয়। সেকুলার দৃষ্টিতে তার বিয়ের বয়স হয়েছে, এখন রূপ-যৌবন প্রদর্শনের ব্যবস্হা করে মুসলিম নামধারী কোন স্মার্ট মুনাফিকের হাতে দরদাম ঠিক করে বিক্রি করে দেয়ার পালা।
যাহরাহ কদিন আগে আমাকে জানালো:
বাবা এক ব্যাংক অফিসার পাত্রকে পরশু বাসায় দাওয়াত দিয়েছে আমাকে দেখে যাওয়ার জন্য। ছেলে অনেক টাকা বেতন পায়, ফর্সা, লম্বা, হ্যান্ডসাম। বাবা মুগ্ধতা নিয়ে আমাকে ছেলের ব্যাপারে বারবার বলছে। কিন্তু আমার কাছে একজন ব্যাংক অফিসার মায়ের সাথে ব্যভিচারকারী, সুদের লেখক ও সাক্ষী আর আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধ ঘোষণাকারী ব্যতীত আর কিছুই না। আমি তার জীবন সঙ্গী হব? সুদ ভক্ষণকারীনী হব? হতে পারেনা। কিন্তু বাবা আমাকে কোন কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেনা মনে হচ্ছে, আমাকে বাধ্য করবে। আমি কি করব?
উত্তর দিলাম:- তোমার বাবা তো তিনিই যিনি ইসলামকে তোয়াক্কা করে চলতে ভালবাসতেন না। আগে টাকা ছিল টাকার গরম ছিল কিন্তু আল্লাহ তাকে বিপদে ফেলেছেন তিনি সেই টাকার জৌলুস হারিয়েছেন। আল্লাহ তাকে সুযোগ দিয়েছিলেন কারণ আল্লাহ যাদের ভালবাসেন তাদেরকে অধিক বিপদে ফেলেন যেন তারা আল্লাহ অভিমুখী হয়, নিজেদের ভুল শুধরে নেয়। কিন্তু তোমার বাবা সেই মানুষ নন যে নিজের অভিভাবক হিসেবে আল্লাহকে মেনে নিবে। তাহলে কোন যুক্তিতে সে আল্লাহতে বিশ্বাসী একজন নারীর অভিভাবকত্ব দাবি করার অধিকার রাখে? মুমিনদের অভিভাবক একমাত্র আল্লাহ ও তার রাসূল, তার দুনিয়ালোভী বাবা মা নন। মহান আল্লাহ বাবা-মায়ের আদেশ মানাকে সন্তানের জন্য ফরজ করেছেন, উহ! শব্দ উচ্চারণ করতেও নিষেধ করেছেন যদিও তারা অমুসলিম হয় কিন্তু সেই আদেশ মানতে অবাধ্য হতে বলেছেন, কঠোর হতে বলেছেন-যা হয় সন্তানের জন্য আল্লাহকে অমান্য করার প্রত্যক্ষ হুকুম। কারণ মুমিনের প্রকৃত অভিভাবক মহান আল্লাহ, তার দুনিয়ালোভী বাবা মা না। এই আদেশ অমান্য কর যদিও তারা তোমার গায়ে হাত তোলেন। ভয় পাচ্ছ? আল্লাহর উত্তর শোন, শয়তান মানুষকে দারিদ্রতার ভয় দেখায় আর অশ্লীলতার আদেশ দেয় আর আল্লাহ তো মানুষকে অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন আর ক্ষমার দিকে আহবান করেন। বাবাকে নিজের মনের কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দাও, মুমিন ভয় করবে আল্লাহকে, মানুষকে না।
যাহরাহ:- "বাবা আমাকে দেখে আম্মুকে বলছে, মেয়েটা তো শুকিয়ে গেছে কাল ছেলের সামনে নেয়াটাই সমস্যা হয়ে যাবে" মনে হচ্ছে, আমি কোরবাণির গরু আর আমার শরীর নাদুস নুদুস না, এই দুঃখে বাবা আমাকে কাল হাটে ভাল দামে বিক্রি করতে পারবেনা, এই চিন্তায় অস্হির হয়ে গেছে। ঔ ছেলেকে বাবা আনবেই, তার কথার নড়চড় হবেনা।
আমার উত্তর:- হে আল্লাহর বান্দী! এটা তোমার জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে পরীক্ষা। ইবরাহীম (আঃ), শোয়াইব (অাঃ), মুহাম্মাদ (সাঃ) এর মত নবীদের এমন পরিস্হিহিতে পরতে হয়েছে যখন তারা নিজ পরিবার ও আত্নীয়-স্বজন দ্বারা আশ্রিত ছিলেন। কিন্তু তারা আল্লাহর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পরিবার ও আত্নীয়স্বজনদের কাছে নতি স্বীকার করেননি, অগ্নিকুণ্ডে ঝাপ দিয়েছেন, অত্যাচারকে আলিঙ্গন করেছেন। আবু সুফিয়ান কণ্যা রামলা (রাঃ) এর কথা স্মরণ কর, নিজ বাবা কুরাইশদের নেতা। মুসলিমদের বিরুদ্ধে অত্যাচারে সে সিদ্ধহস্ত আর যুদ্ধে সর্বদা নের্তৃত্বদানকারী। তার সারা জীবন কেটেছে মুসলিম নিধনে আর ইসলামের বিরোধীতা করে অথচ সেই বাবার সন্তান হয়েও রামলা (রাঃ) আল্লাহর উপর ঈমান এনেছেন তার বাবার ভয়কে উপেক্ষা করে, অত্যাচারকে আলিঙ্গন করেছেন নিজ জীবনে। কিন্তু আর কত? নিজ মাতৃভূমি, আশ্রয় ছেড়ে আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছেন। শেষ আশ্রয় জীনবসঙ্গীও সেখানে মারা গেছে। তবুও বাবার কথামত ইসলাম ত্যাগ করেননি। রাসূল (সা) তার কথা জেনেছেন আর সেই অসহায় নারীকে মদিনায় নিয়ে এসেছেন নিজ স্ত্রী হিসেবে নবীগৃহে ঠাই দিয়েছেন। পূর্বেও আসিয়া (আঃ), সারা (আঃ), হাজেরা (আঃ) সহ অনেক বিশ্বাসী নারীর উপরই এমন কঠিন সময় অতিবাহিত হয়েছে। হে বিশ্বাসী নারী! কাজেই তুমিই প্রথম নও, অনেকের মাঝে একজন। হে মুসলিম নারী! মুসলিম নারীদের অভিভাবক আল্লাহ ও তার রাসূল, দুনিয়ালোভী মুসলিম নামধারী মুনাফিক নয়। কুরাইশরা অবশ্যই আল্লাহকে বিশ্বাস করত, তাকে একক বলেই জানত, তার নামে শপথ করত, তার সাহায্য কামনা করত কিন্তু তার নবীকেই প্রত্যাক্ষান করেছিল, আল্লাহর আইনকে তারা অমান্য করেছিল। হুদায়বিয়ার সন্ধিকালে তারা শর্ত দিয়েছিল, মক্কার কেউ ইসলাম গ্রহণ করে মদিনায় আশ্রয় চাইলে মুসলিমরা তাদের আশ্রয় দিতে পারবেনা রাসূল (সা) মেনে নেন কিন্তু তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, এটা শুধু পুরুষের বেলায় আমরা মানতে রাজি আছি, মক্কার কোন নারী মুসলিম হয়ে মদিনায় আশ্রয় চাইলে আমরা তাকে কখনো ফিরিয়ে দিবনা। তোমাদের কোন অধিকার নেই তাদের ফিরিয়ে আনার, মুমিন নারীর অভিভাবক আল্লাহ ও তার রাসূল, দুনিয়ালোভী বাবা-ভাই নয়, আল্লাহ বিদ্রোহী স্বামি নয়।
যাহরাহ:- পাত্রের ফ্যামিলি আমাদেরকে আজ বিকেলে একটা রেস্টুরেন্টে যেতে বলেছে আমাকে দেখার জন্য। বাবা কড়া আদেশ দিয়েছে রেডি থাকার জন্য, আমার করণীয় কি?
আমার উত্তর: নিকাব পরে যাবে। যদি পাত্রের সাথে বাবা ছাড়াও কোন পুরুষ আত্নীয়-স্বজন আসে তবে তাদেরকে সরাসরি বলবে যে, ইসলাম এই অনুমতি দেয়না যে, আপনাদের সামনে আমি মুখ খুলব আর আপনারা আমাকে দেখবেন। তাই আমি শুধু পাত্রের সামনে মুখ খুলতে রাজি আছি। হয়ত পাত্র তোমার সাথে আলাদা কথা বলতে চাইবে, মুখ খুলতে বলবে। তখন তাকে বলবে, "নেকাব খোলার আগে আমার কিছু কথা আছে।" আপনার ব্যাংক জব নিয়ে আপত্তি আছে কারণ আপনার আয়ের উৎস হল সুদ। যারা সুদের পক্ষ অবলম্বণ করে তারা যেন আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়- এটাই মহান আল্লাহর সিদ্ধান্ত। সুদের দ্বারা ৭০টির বেশি মারাত্নক গুনাহ সংঘটিত হয় আর তার মাঝে নিম্নতম হল নিজ আপন মায়ের সাথে ব্যভিচারের মত গুনাহ। সুদ দাতা, সুদ গ্রহীতা, সুদের লেখক ও তার সাক্ষী সকলেই সমানভাবে অপরাধী এবং এই অপরাধের শাস্তি একমাত্র জাহান্নাম। নামাজ কবুলের ফরজ শর্ত হল-পবিত্র শরীর, পবিত্র কাপড়, নামাজের পবিত্র স্হান। কিন্তু এই ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত হল হালাল উপার্জন। হাদিস মতে, হারাম উপার্জনের টাকায় কেনা খাবারে যে শরীর গঠন হয় তা অপবিত্র ও ইবাদতের অযোগ্য, এই টাকায় যে কাপড় কেনা হয় তা অপবিত্র ও হারাম, এই টাকায় যে ঘর তৈরী করা হয় সেই জায়গাও অপবিত্র ও হারাম তাই সেই জায়গায় নামাজও হারাম। তাই সুদের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার জন্য আপনার নামাজ, রোজা, হজ্জ এমনকি কোন দান-সদাকাহ পর্যন্ত কবুল হবেনা। আপনার সাথে আমার বিয়ে হলে আমিও আপনার হারাম উপার্জনের ভাগিদার, হারাম ভক্ষণকারীণী হব, আল্লাহর ক্রোধের পাত্রী হব, তাই আমি রাজি হতে পারছিনা।" বাবার ভয় যেন তোমাকে সত্য প্রকাশে বাঁধা না দেয়।
একদিন পর যাহরাহ এর উত্তর: যখন পাত্রের সামনে গেলাম আমি খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম, পাশে বাবা-মা, সামনে পাত্র আর তার ফ্যামিলি কিন্তু সবার উপরে আল্লাহ। আমি ভয়ে কোন কথা বলতে পারছিলাম না। জানিনা হটাৎ কি হল! তোমার কথাগুলো চোখের সামনে ভাসতে শুরু করল, সাহস বেড়ে গেল। পাত্রের চাচা, ভাই এর সামনে নেকাব খুলিনি। পাত্র কথা বলতে চাইলে তুমি যা বলেছ তা মুখস্ত বুলির মত বলে চললাম পাত্রকে। সে কিছুটা রোমান্টিক আবহ তৈরী করতে গিয়েও ব্যর্থ হল। আমাকে নেকাব পর্যন্ত খুলতে বললোনা। কিছু সময় পরে তারা ফ্যামিলি নিয়ে চলে গেল। বাবা পারলে যেন আমাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবেন জানিনা এরপর কি হবে? তুমি কোন দীনি পাত্রের সন্ধান করবে?
আমি বেশ কিছুদিন যাবতই তার জন্য দীনি পাত্রের সন্ধান করেছি কিন্তু হতাশা ছাড়া কোন কিছু অর্জন করতে পারিনি। যাহরাহ এর কাছে দীনি মানে, দীনি, যে দীন পালনে কোন অজুহাত পেশ করেনা আর হালাল উপার্জনের ব্যবস্হা আছে যেন তার বাবাও অমত না করেন।
তার বাবা তাকে চরম শিক্ষা দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাকে ব্যাংকার পাত্রের সাথেই বিয়ে দিবে, দেখি সে কিভাবে আটকায়? বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরিরত কোন এক পাত্র তাকে কদিন বাদেই আবার দেখতে আসছে।
জানিনা এই তামাশার শেষ কোথায়?
বিষয়: বিবিধ
২৩৭০ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
।
বড্ড কঠিন ও জটিল সে সংগ্রাম- সে-ই বোঝে যে করে/করেছে! এর তূলনায় উল্টা দিক থেকে ফিরে আসার সংগ্রাম অনেক অনেক সহজ!!
উত্তরের অপেক্ষায় আছি.........
ব্যবস্থায়, শতভাগ ইসলাম চিন্তা করা যায় না। চালিয়ে যান, আপনার লেখার হাত ভাল।
ইজরাঈল রাষ্ঠ্রের প্রতিষ্ঠা তো অলরেডি হয়ে গেছে আর মদিনারও এখন সেই অর্থে ইসলামি বিশ্বে কোন মর্যাদা নেই। সৌদির রাজধানী এখন রিয়াদ, মদিনা না। আর মদিনা এখন ইজরাঈলী পুতুল সৌদ রাজাদের রাজধানী রিয়াদ দ্বারা শাসিত ও নিয়ন্ত্রিত। কাজেই পরবর্তী দুটো ঘটনা অর্থাৎ মালহামাতুল কুবরা ও তুরষ্ক দখল হয়ে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। যেটা অন্য হাদিসে বলা হয়েছে মুসলিমরা আশ-শামের দাবেক ও আমাক নগরীতে থাকাকালীন সময়ে জানতে পারবে যে তুরষ্ক দখল হয়ে গেছে। জাঝাক আল্লাহ মন্তব্য প্রদানের জন্য।
নাকি সেটা ফ্যামিলির লোকেরা নির্ধারণ করবে বিধায় সেটাতে মাথা ঘামাতে চান না ?
একজন ২৫/২৬ বছরের সদ্য চাকুরীতে জয়েন করা যুবকের কি ১০ লাখ টাকা দেনমোহর এক শটেই দিয়ে দিতে পারার কথা ?
বিয়ের আগে মেয়েরা নিজেদের মধ্যে বেশ দ্বীনি একটা লুক আনে । হাব ভাবে এমন যে তার মত দ্বীনি খুব কমই আছে ।
বিয়ের পর সব খুল্লাম খুল্লা । তার ডিমান্ড আধুনিক মেয়েদের চাইতে কোন অংশে কম হয় না । প্রতারিত হয় ছেলে এবং ছেলের অভিভাবকেরা ।
০ ক্বুরআানের কোন এক আয়াতে জানা যায় যে - কোন এক যুদ্ধে লব্ধ গনীমতের মাল নিয়ে নবীপত্নীরা একটু বেশী আকাঙ্খা করলে রাসূল (সাঃ) তাদেরকে দুনিয়ার জিনিস এর প্রতি আকর্ষন এর কারণে লব্ধ মালগুলো দিয়ে বিদায় করে দিতে চেয়েছিলেন ।
নবীপত্নীরাও তো এসব দুনিয়াবী আকর্ষন থেকে মুক্ত ছিলেন না ।
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ গোটা দুনিয়াই হলো সম্পদ। আর দুনিয়ার মধ্যে পুণ্যবতী স্ত্রীলোকের চেয়ে অধিক উত্তম কোন সম্পদ নেই। [সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৯/ বিবাহ, পরিচ্ছদঃ ৯/৫. সর্বোত্তম মহিলা, হাদিস নং:১/১৮৫৫, পাবলিশারঃ বাংলা হাদিস)
তাই একজন মুমিন নারীর মর্যাদা অনেক বেশি তাকে নিয়ে অথযা বাজে ধারণা করবেননা। হাসান বিন সাবিত (রাঃ) এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাহাবী ছিলেন কিন্তু যখন আয়িশা (রাঃ) এর বিরুদ্ধে মুনাফিকেরা ব্যভিচারের মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করে, হাসান বিন সাবিত তার সত্যতার ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়েই মদিনাতে নারী-পুরুষের কানে কানে সে কথা ছড়াতে লাগল। অথচ তা ছিল মিথ্যা। এ অপরাধের শাস্তিস্বরূপ আল্লাহ তাকে অন্ধ করে দিয়েছিলেন। আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে তিনি নিজের কৃতকর্মের জন্য আইশা (রাঃ) এর নিকটও মাফ চান।
কথাটা অনেক কঠোর হয়ে গেল কিন্তু এটা বলার উদ্দেশ্য এটাই যে, নিছক ধারণা থেকে মুমিন নারীদের ব্যাপারে খারাপ ধারণা করা আদৌ সঠিক নয়। আপনাকে আগেও বলেছি এখনও বলছি: আল্লাহ সব মানুষকে ক্লোন করে বানাননি। কোন নারীর ত্রুটির জন্য সে নিজে দায়ী, অন্য নারী না।
আপনি কোন ঘটনার আগেরটুকু পরেরটুকু না জেনে নবীপত্নীদের ব্যাপারে কিভাবে বলেন যে, তারা দুনিয়াবী আকর্ষণ থেকে মুক্ত ছিলেননা?? যখন কুরআনের আয়াত নাজিল হল যে, হে রাসূল! আপনি আপনার স্ত্রীদের বলে দিন যে, তারা যদি পার্থিব জীবন আশা করে তবে আমি তোমাদের তার ব্যবস্হা করে দিব এবং এবং তোমরা ইচ্ছা করলে আমার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে যেতে পার। তখন তিনি সর্বপ্রথম আইশা (রাঃ) কে কুরআনের এই আয়াত শোনালেন এবং বললেন, যদি তুমি আমার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ চাও, আরো ভাল থাকতে চাও তবে তুমি এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পার। এব্যাপারে তোমার বাবা-মায়ের সাথে আলোচনাও করতে পার। রাসূল (সাঃ) এর কথা শেষ না হতেই আইশা (রাঃ) সাথে সাথে রাসূল (সাঃ) এর মুখের উপরেই জবাব দিলেন, এই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আমি আমার বাবা-মায়ের সাথে আলোচনায় বসব? হে আল্লাহর রাসূল! জেনে রাখুন আমি তো আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আল্লাহর রাসূলকেই ইহকাল ও পরকালে কামনা করি। ঘটনা যখন তার অন্য সব স্ত্রীর কানে গেল তারাও এসে একইরকম মন্তব্য করলেন।
তারা যদি সত্যিই দুনিয়াবী আকর্ষণ দ্বারা আচ্ছন্ন হতেন, তবে এমন কথা নিশ্চয়ই বলতেননা তাইনা? রাসূল (সাঃ)এর মৃত্যুর পর যখন উমার (রাঃ) রাসূল ﷺ এর বিধবা স্ত্রীদের জন্য ভাতা নির্ধারণ করলেন এবং সেই হিসাবে ১২০০০ দিরহাম যয়নাব (রাঃ) এর নিকট পাঠালেন যয়নাব (রাঃ) তার সমস্ত কিছুই গরীবদের মাঝে দান করে দিলেন। তিনি হাতে তৈরী নানান জিনিস বানাতেন এবং তা বিক্রি করে যা পেতেন সেই অর্থ গরীবদের মাঝে দান করে দিতেন। অথচ নিজে চলতেন খুব কষ্টে। ফুফু আয়েশা (রাঃ) এর আর্থিক কষ্টের খবর জেনে ভাতিজা আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাঃ) ১ লক্ষ দিরহাম উপহার হিসেবে নিয়ে আসেন। সেদিনটি আয়েশা (রাঃ) রোজা ছিলেন। সারাদিন ভরে তিনি ১ লাখ দিরহাম গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দিলেন সন্ধায় ইফতারীর সময় দেখা গেল তার ঘরে কোন খাবার নেই। রাসূল (সাঃ) প্রত্যেক স্ত্রীই এমন কোননা কোন গুণের অধিকারী ছিলেন। তাই কি বলছেন, ভেবে দেখা উচিত।
আর মেয়েদের দূর্বলতা যখন ধরেন তখন কি এটা মনে আসার কথা না যে, আপনি রীতিমত আল্লাহর দূর্বলতা খুঁজছেন? কেউ তো আর নিজের ইচ্ছাতে মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়না তাইনা? আল্লাহই তাকে মেয়ে হিসেবে সৃস্টি করেন। তার মাঝে মেয়েলি কিছু দূর্বলতা এজন্যই দেয়া হয় যে, তা পরবর্তীতে সংসারের মঙ্গলের জন্যই কাজে লাগে। এই দূর্বলতাগুলোর গুরুত্ব বুঝে যদি তাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা যায় তখন সেটি আর দূর্বলতা থাকেনা বরং সম্পদে পরিণত হয়। পুরুষদের কষ্ট, তাদের ত্যাগ, তাদের ভালবাসা সত্যিই অনন্য তা অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু সব পুরুষই তো আর ধোয়া তুলসি পাতা না, তাইনা? আপনার চোখে শুধু নারীদের ভুলগুলো ধরা পরবে, পুরুষদেরটা আড়ালে থেকে যাবে, এমন কেন? আপনি পুরুষ বলে?
একটা কথা বলি ভাইয়া রাগ করবেননা। হ্যা এটা হয়ত ঠিক। বিয়ের সময় দেখা যায় মেয়ে খুব দীনি,সেই মাপের ধার্মিক, অথচ বিয়ের পরই আপনার ভাষায় খুল্লাম, খুল্লা। এর কারণ কি জানেন ভাইয়া? যেই ছেলে নিজে ধার্মিক না সে কোন যুক্তিতে, কোন দাবিতে আবার বিয়ের সময় ধার্মিক মেয়ে খোঁজে? হাফ ধার্মিক, নামে মুসলিম ছেলে আর তার পরিবার ধার্মিক মেয়ে খোঁজার মিশনে বের হয় তারপর সত্যিই পেয়েও যায় একজন ধার্মিক মেয়ে কিন্তু বিয়ের পর দেখা যায় মেয়ের চরিত্র পুরো ভিন্ন। এর কারণ কি জানেন ভাইয়া? কুরআনে আছেনা, মুমিন পুরুষ মুমিন নারীদের জন্য, মুমিন নারী মুমিন পুরুষদের জন্য, মুনাফিক নারী মুনাফিক পুরুষদের জন্য, মুনাফিক পুরুষ মুনাফিক নারীদের জন্য, মিথ্যাবাদী পুরুষ মিথ্যাবাদী নারীদের জন্য, মিথ্যাবাদী নারী মিথ্যাবাদি পুরুষের জন্য.......... এভাবে সিরিয়ালি যে যেমন তার সঙ্গীও তার জন্য। অর্থাৎ বিয়ের সময় ছেলেরা নিজেরা ধার্মিক না হয়েও ধার্মিক মেয়ে খোঁজে আর মিথ্যাবাদী, ভন্ড মেয়েরাও আবার বিয়ের জন্য, ছেলে ও তার পরিবারের মন জয়ের জন্য কিছুদিন ধার্মিকতার অভিনয় করে যায় আর সেই অভিনয় দীনি বউয়ের জন্য আসা ছেলে আর পরিবারের কাছে সত্য মনে হয়। কিন্তু অভিনয় কি আর সত্যি হয় বলেন? তাই বিয়ের পর ধার্মিকতা ছুটে যায় বেরিয়ে আসে আসল চেহারা খুল্লাম খুল্লা। কি অসাধারণ মিল দেখেন? তাই আগে ছেলেদেরকেও ধার্মিক হতে বলুন, প্রতারণা অফ করতে বলুন।
০ অবশ্যই এটা অযৌক্তিক ! শুধু এই পোস্টেই না এটা সব মেয়েদের কাছেই অযৌক্তিক মনে হয় । যেখানে দেন মোহরের টাকা ছেলেরই নির্ধারণ করা উচিত (কারণ তাকেই তো সেটা পরিশোধ করতে হবে) সেটা নির্ধারণ করে মেয়েরা । এতে দ্বীনী ব্যাপারের চেয়ে স্ট্যাটাসের ব্যাপারটা মুখ্য হয়ে আসে। স্ট্যাটাসের ব্যাপার আসলে মেয়েরা বুর্কিনী হলেও চাপাতে চায় । ধর্মীয় বিধি নিষেধ এখানে তার কাছে থোড়াই পাত্তা পায় ।
০ আশে পাশে এত সিমিলার ঘটনা ঘটতেছে যে এগুলো এখন আর জানারও প্রয়োজন হয় না । ভাত একটু টিপলেই বোঝা যায় ।
ম্যাক্সিমাম পুরুষ মানুষেরাই সাফার করতেছে এবং শরিয়তেরই লঙ্ঘন করতেছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও । আশে পাশে তাকালেই বুঝতে পারবেন ।
দুনিয়াবী চাকচিক্যের প্রতি আকর্ষিত এই জামানার মহিলারা , বুর্কিনি পড়ে হলেও সি-বিচে পর পুরুষদের সামনে সাতার কাটা লাগবেই এরকম মহিলারা নিজেদের মুমিন নারী দাবী করলে ধারনাটা কমে যাবার চেয়ে আরও বাতাস পায় । আপনারা যেমন রাসূল (সাঃ) এর মত পুরুষ পাবেন না তেমনি পুরুষরাও আয়েশা (রাঃ) এর মত মহিলা পাবে না ।
০ এ কথা উনি কিসের প্রেক্ষিতে বলেছিলেন ?
০ মেয়েলি দূর্বলতাকে সে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগায় এবং মনুষ্য আইনকে সাথে এড করে মহা মৌজে থাকে । এটাই বাস্তবতা । কারও প্রতি আপনি যদি কোন কারণে সিমপ্যাথী দেখান আর সে যদি সেটাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগায় তখন তার প্রতি আপনার সিমপ্যাথী কি আরও উথলে উঠবে ?
আমাদের সমাজের এখনকার নারীরা ম্যাক্সিমামই সিমপ্যাথীকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগায় যার প্রভাব তো সবার কাছেই স্পষ্ট ।
০ ঠিক । একজন পুরুষ যেমন একজন নারীকে ধর্ষন করে , হেনস্তা করে - ঠিক এমনও কেউ কেউ আছেন যারা এসব ঠেকাতে নিজেদের জীবনও পর্যন্ত দিয়ে দেন । কিন্তু বদনাম হয় ঐ সব কুলাঙ্গারদের জন্য ।
একজন ভাই তার বোনের সম্ভ্রম রক্ষার্থে বখাটেদের মার খায় । কোন বোনকে কি দেখেছেন তার ভাবী যে তার আদরের ছোট ভাই বা শ্রদ্ধেয় বড় ভাইকে মহা প্যারাতে রাখে সেজন্য প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে ? নারীদের মধ্যে এরকম কখনও কল্পনাই করা যায় না , কারণ সেও তো আরেক জায়গায় প্যারা লাগাচ্ছে ।
ধোঁয়া তুলসী কারা ?
০ ধর্মীয় বিধি নিষেধ হুকুম আহকাম পালন করার ব্যাপারে মেয়েরা যে কতটা অগ্রগামী ...
* যে কোন ম্যাগাজিন খুললেই মেয়েদের ছবি দেখা যায় ।
* টিভি খুললেই যে কোন প্রতিযোগিতামূলক নাচ গান অভিনয় এসবে মেয়েদেরই জয় জয়কার
* সুন্দরী প্রতিযোগিতায় হার জিত এদের চোখে পানি নিয়ে আসে
ধর্মীয় কাজ যদি এগুলো হয় তাহলে তো পুরুষরা এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়েই আছে বরং বলা ভাল যে কখনই এগিয়ে আসতে পারবে না । এটা নারীর দূর্বল দিকের জন্য পাওয়া সুযোগের সদ্ব্যবহারের ফসল।
দ্বীনি কাজে বরং পুরুষদেরকেই এগিয়ে আসতে দেখা যায় যেমনটা দুনিয়াবী গ্লামারাস কাজে মেয়েরা এগিয়ে ।
তাই আগে ছেলেদেরকেও ধার্মিক হতে বলুন, প্রতারণা অফ করতে বলুন।
০ আপনাদের কাছে যেটা ধার্মিকতার বিষয় সেটাতে কি ছেলেরা পারবে বা পারার মত সেই সৌভাগ্যময় দূর্বলতার ব্যাপার আছে ?
আমি একটা মেয়ের গল্প লিখেছিলাম, যার বাবা নামাজ-কালাম, দাড়ি-টুপি, বোরখা এসব ব্যাপারকে দুচোখে সহ্য করতে পারেনা। এসব দেখলে সে শাসানো শুরু করে। এমন পরিবারে জন্ম নিয়ে একটা মেয়ে নিজের জীবনকে দ্বীনি পথে পরিচালিত করার সাহস দেখিয়েছে। বাবার চোখ রাঙ্গানী উপেক্ষা করে হিজাব, নিকাব, আবায়া, নফল ইবাদত ও ইসলামী সুক্ষাতিসুক্ষ্ন জ্ঞান অর্জন ইত্যাদির ব্যাপারে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে গেছে। তার বয়স ২৪ বাবা তাই মেয়ের এই অতি ধার্মিকতা ছুটানোর জন্য বেদীন, তথাকথিত স্মার্ট মুনাফিকের সাথে বিয়ে দিতে চাইছে। যেন একদিকে তার মেয়ে বোরফা টোরখা, ধর্ম কর্ম ছাড়তে বাধ্য হয় আর জামাই বাবাজী তার জন্য এটিএম বুথের কাজ করে। একবছর আগে এমন এক পাত্রকে ঠিক করেছিল তার বাবা কিন্তু সে রাজি ছিলনা। এবার এক ব্যাংক অফিসারকে তার বাবা ঠিক করেছিল কিন্তু সে রাজিনা তাই তাকে জোড় করেই নিয়ে গেল। বাবার আপত্তির পরও সে নেকাব-হিজাব ছাড়া যায়নি আর সবার সামনেই পাত্রকে বলেছে, তার ইনকাম হালাল নয়, সুদের টাকা, তাই সে রাজি না, সে দ্বীনি হাজবেন্ড আশা করে। তার বাবা তার তার উপর মানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে এখনো চালাচ্ছে কিন্তু সে অনড়।
আমি এটি উল্লেখ করেছি আর আপনি এর মাঝে ১০ লাখ দেখতে পান, নারীরা সব খারাপ তা বুঝে ফেলেন, এসব আপনি পেয়েছেন কোথায় হ্যা!!!
এসএসসি পর্যন্ত আমি সাইন্সের স্টুডেন্ড ছিলাম তাই আমি জানি, ভাত রান্নার সময় যদি চালের সব অংশে সমানভাবে তাপ না পৌছায় তবে কিছু চাল ভালভাবে সিদ্ধ হবেনা ফলে অধিক তাপ পাওয়া চাল নরম ভাতে পরিণত হলেও কম তাপ পাওয়াতে কিছু চাল আধাসেদ্ধই থেকে যাবে। এজন্যই ভাতে ফুটন্ত পানি ব্যবহার করা যেন সব অংশে সমানভাবে তাপ পৌছায়। কাজেই ভাতের সাথে নারীদের তুলনা করা হাস্যকর। আর যেখানে কুরআন নিজেই বলছে, আমার ফাসিক বান্দারা যখন তোমাদের কাছে কোন সংবাদ নিয়ে আসে তখন তোমরা তার সত্যতার ব্যপারে নিশ্চিত হয়ে নাও, কেননা, হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে সেই খবরের ভিত্তিতে তোমরা এমন কোন সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করে বসতে পার, যার জন্য তারা আদৌ দায়ী নয়,তাই পরে তা তোমাদের জন্য আফসোসের ও মনকষ্টের কারণ হবে।
এজন্য আপনার এসব অসংলগ্ন কথাবার্তা, যুক্তিহীন ধ্যান-ধারণা আপনার কাছেই রাখুন। আর এতই যখন লেকচার দিচ্ছেন তখন নিজের বোন, নিজের মেয়েকে অন্তত কোন গরীব পাত্রের হাতে পাত্রস্হ করুন যেহেতু আপনি খুব পুরুষ দরদী ব্যক্তি। অযথা আর বড় বড় লিখা দিবেননা আমার শরীর ভালনা ইচ্ছা হয়না এসব ঠুনকো বিষয় নিয়ে তর্কে যেতে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন